স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ; কেন করবেন ?

কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াকালীন সময়ে প্রাতিষ্ঠানিক পড়ার বাইরেও যে সময়টুকু আমরা পাই সেটাকে সুন্দরভাবে কাজে লাগানোর অন্যতম একটি মাধ্যম হতে পারে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ।  দেশ ও সমাজের একটি অংশ হিসেবে এর উন্নয়নের জন্য কাজ করতে পারা সত্যিই একটি দারুণ ব্যাপার। অনেকেরই মনে হতে পারে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ কেন করবো? কেন বিনা পয়সায় বেগার খাটবো?  আসুন জেনে নিই স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের কিছু দারুণ দিক যা আপনার এই ধারণাকে আমূল বদলে দেবে।





পরিবর্তন আসবে আপনার হাত ধরে :
আপনি হয়তো অনেক বড় কোন কাজ করছেন না। কিন্তু আপনার এই কাজটুকু অনেক বড় একটা কাজেরই অংশ যা সমাজে কোন না কোনোভাবে পরিবর্তন আনছে। এই প্রাপ্তিটুকু অনেক। দেশ কিংবা সমাজ থেকে তো আমরা অনেককিছুই নিচ্ছি। এর প্রতিদান দেওয়ার খুব সুন্দর আর কার্যকর একটা মাধ্যম হতে পারে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ।
কমফোর্ট জোনের বাইরে কাজের সুযোগ :
কমফোর্ট জোনের বাইরে যেয়ে কাজের সুযোগ পাবেন। অনেক সময় পরিস্থিতিই আপনাকে এই সুযোগ করে দেবে। এতে করে বাস্তব জীবনের কর্মক্ষেত্র সম্পর্কে যেমন ধারণা হবে তেমনি পাবেন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার সাহস।
নেতৃত্ব চর্চার দারুণ প্লাটফর্ম :
স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ হতে পারে হাতে কলমে নেতৃত্ব চর্চার দারুণ সুযোগ। নিজের ভেতরকার নেতৃত্বের দক্ষতাগুলোকে আবিস্কার করতে পারবেন নতুন করে।
শেখার সুযোগ :
কাজ করতে গিয়ে আপনি শিখতে পারেন অনেক কিছু। যে বিষয় নিয়েই কাজ করেন না কেন সে বিষয়টি সম্পর্কে হাতেকলমে জ্ঞান অর্জনের সুযোগ থাকে এ ধরণের কাজে।



দক্ষতার উন্নয়ন :
সময়ানুবর্তিতা, উপস্থাপন কৌশল, সাংগঠনিক দক্ষতা আর দলগত কাজের মত দক্ষতা আপনি অর্জন করতে পারেন স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের মাধ্যমে। নিজের কমফোর্ট জোন থেকে বের হয়ে বাস্তব জীবনে কাজ করার অভিজ্ঞতা লাভ করবেন যা আপনাকে করে তুলবে দক্ষ। অভিজ্ঞতার ঝুলিকে করবে সমৃদ্ধ যা পরবর্তীতে আপনাকে চাকুরিবাজারে অন্যদের থেকে এগিয়ে রাখবে অনেকখানিই।
আত্মবিশ্বাস লাভ :আমরা যখন কোনো কাজ করি তখন তা আমাদের মাঝে একধরণের পরিতৃপ্তি আসে। আত্মবিশ্বাস জন্ম নেয়। নিজেকে আরও এগিয়ে নেওয়ার স্পৃহা জাগে।



সুস্থ থাকবেন :
শুনতে হয়তো একটু অবাক লাগছে। কিন্তু এটা সত্যি। গবেষণা বলে আপনি যখন মানুষের সমস্যা নিয়ে কাজ করেন তখন নিজের সম্পর্কে দুশ্চিন্তা অনেকাংশেই কমে যায়। এতে করে আপনার প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় আর জীবন সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা বৃদ্ধি পায়। এছাড়াও এ ধরণের কাজ কমায় ডিপ্রেশনের মত সমস্যা।
নিজেকে নতুনভাবে আবিস্কার করা :
এ ধরণের কাজ করতে গিয়ে আমরা নিজেদের আবিস্কার করতে পারি নতুন করে। আমার কোথায় আগ্রহ,  কি ধরণের কাজ আমি ভালোবাসি সে সম্পর্কে নতুনকরে ধারণা পাই। নিজের সামর্থ্য ও দুর্বল দিকগুলো সম্পর্কেও জানা যায়।



নতুন নতুন মানুষের সাথে পরিচয় ও বন্ধুত্ব :
ভিন্ন মাধ্যমের মানুষজনের সাথে কাজ করা, পরিচয় ও বন্ধুত্বের চমৎকার সুযোগ থাকে স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজে। ভিন্ন আর্থ সামাজিক অবস্থা সম্পর্কে যেমন জ্ঞান লাভ করা যায় তেমনি সহকর্মীদের কাছ থেকে শেখা যায় অনেক কিছু।
নেটওয়ার্কিং :
নেটওয়ার্কিং  এর একটা দারুণ জায়গা হলো স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজ। অনেক ধরণের মানুষের সাথে মেলামেশার মাধ্যমে আপনার চেনাজানা লোকের পরিধি বাড়বে। সেই সাথে বাড়বে সুযোগও।

Powered by Blogger.